শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭

বই-দরজার ওপাশে

লেখক-হুমায়ূন আহমেদ
ধরন-উপন্যাস
পৃষ্ঠা-৮৬
মূল্য-১৮০
জ্ঞানকোষ প্রকাশনী
...
ঘুমের মধ্যে কেউ ডাকলো, হিমু,  এই হিমু
গলার স্বর চিনতেও পারছে না আবার অপরিচিতও না।  
আধো ঘুমে হিমু জবাব দিলো কে?
কিন্তু কোন সাড়া পাওয়া গেল না। 
সে আর স্বপ্ন টা দেখতে চাইলো না। কেন না দরজার ওপাশের মানুষ টাকে সে দেখতে চায় না। তার ইচ্ছা নেই দরজার ওপাশে কে এটা জানার।  প্রচন্ড অস্বস্তিতে ঘুমের মাঝেই হিমু জেগে উঠলো।

জায়গা টা হিমুর মেস।  সে বাইরে গিয়ে দেখলো সকাল হয়ে গেছে। বাইরে গিয়েই বায়োজিদ সাহেবের সাথে তার দেখা হয়।লোকটার  চোখ সবসময় লাল থাকে।তিনি হিমু কে তার মেয়ের জন্য দোয়া করতে বললেন। হিমু তার কারন জানতে চাইলে বলল, "আপনি মহাপুরুষ ধরনের মানুষ।  আপনি দোয়া করলে আমার মেয়েটার মঙ্গল হবে "।

হিমু তাকে বুঝাতে চাইলো সে মহাপুরুষ টাইপের কিছু না।  কিন্তু বায়োজিদ সাহেব পিছু ফেরেন নি।  হিমুর খুব অসস্তি লাগলো এই ভেবে, দিন দিন তাকে মহাপুরুষ ভাবার লোকের সংখ্যা বাড়ছে। রফিকের কথা ভেবে হিমু বেড়িয়েছিল কিন্তু রফিক নিজেই এসে হাজির। রফিক তার কাছে জানতে চাইলো তার কোন উকিলের সাথে পরিচয় আছে কিনা।কারন তার চাকরি চলে গেছে।

হুমায়ূন আহমেদ এর সৃষ্ট অন্যতম একট চরিত্র "হিমু"
হিমুর পুরো নাম হিমালয়। হিমুর বাবার , ইচ্ছা ছিলো তার ছেলে হবে হিমালয়ের মতো বিশাল। এবং সে হবে মহাপুরুষ।
দরজার ওপাশে হিমু সম্পর্কিত উপন্যাস।  অন্যান্য উপন্যাস গুলোর মতোই হিমু সক্রিয়।

গল্প যখন ধীর পায়ে  এগিয়ে যাচ্ছে তখন  হিমুর সাথে দেখা গেল বন্ধু রফিকে, জহির যে একজন মন্ত্রী পুত্র , রফিকের স্ত্রী রানু, জহিরের বোন তিতলী, জহিরের বাবা তেল ও জ্বালানী মন্ত্রী মোবারক হোসেন এমন কি  হিমুর ফুফা, বাদল আর  একজন ছিলেন তিনি  পুলিশের ওসি।

এই উপন্যাসের কিছু লাইন  আমার বেশ পছন্দের-

-তার গা থেকে কেউ একজন লেবুর মতো সমস্ত রস চিপে নিয়ে নিয়েছে।
-তোকমার সরবত খাবার সময় মনে হয় ছোট ছোট কেঁচোর টুকরা পানিতে গুলে খেয়ে ফেলেছি।
-অধিক শোকে পাস্তুরীভূত অবস্থা।
-তোমার নাম যেন কি বললে?এভারেস্ট?
না, আমার নাম হিমালয়
-পুলিশ এ্যারেস্ট করে থানায় নিয়ে বাঁশডলা দিবে।
-শিয়ালের শিং দেখেছেন?
-হাড্ডি যা আছে পানি হয়ে পিশাবের সঙ্গে বের হয়ে যাবে।
-যে পুরুষ দেখতে সুন্দর সে কোন কাজের হয় না।

হুমায়ূন আহমেদ এর দরজার উপাশে বইটাতে অন্যরকম একটা ব্যপার আছে। যা অন্য গুলো থেকে আলাদা।  হিমুর স্বাভাবিক কর্মকান্ড এর সাথে নতুন কিছু যোগ ছিলো এতে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন