লেখক- সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ
ধরন-উপন্যাস
পৃষ্ঠা-১৭৮
মূল্য-১৫০
ধরন-উপন্যাস
পৃষ্ঠা-১৭৮
মূল্য-১৫০
অতিশয় দুর্বৃত্ত পিতা খেদমতুল্লার পুত্র মুস্তফা। বহু প্রতিকূলতা সত্ত্বেও নিজের চেষ্টায় উচ্চশিক্ষা লাভ করে। এবং কুমুরডাঙার ছোট হাকিম হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়। সেখানের প্রাক্তন উচ্চপদস্থ কর্মচারী আশরাফ হোসেন এর সাথে তার পরিচয় হয়। আর সেখান থেকে পরিচয় হয় আশরাফ হোসেন এর মেয়ের সাথে। একে অপরের ভালো লাগা থেকে তাদের বিয়ে ঠিক হয়। মুস্তফা তার বাড়িতে পাঠানো চিঠিতে সে নিজের বিয়ের কথা জানায়।
খেদমতুল্লাহর বোন বিধবা হয় তার ছয় সাত বছরের কন্যা খোদেজাকে নিয়ে। তখন তিনি তার বোনকে সান্ত্বনা দিয়েছেন এই বলে যে, বড় হলে মুস্তফার সাথে খোদেজার বিয়ে দিবেন। খোদেজা হয়ত মুস্তফাকে তার স্বামী হিসেবে লালন করেছে ছোট বেলা থেকে। কিন্তু মুস্তফা তাকে কখনো নিজের বাগদত্তা ভাবে নি।তবুও মুস্তফার আচরণ যেমন, খোদেজার প্রতি তার কর্তব্যপরায়ণতা। এসকল দিক থেকে এই প্রতিশ্রুতি আরো বেশি জোরালো করে ছিলো।তাই হঠাৎ এই চিঠি আসায় বাড়িতে গোলায় আগুন লাগার মতো অবস্থা হলো। কেন না এ চিঠি কে কেন্দ্রকরে ঘটেগেছে এক করুন কাহিনী।
উপন্যাসের দ্বিতীয় কাহিনী হলো, কুমুরডাঙার অবস্থা। লেখক সেখান কার অবস্থার কথা বর্ননা করেছেন। বাঁকল নদীতে (লোকে বলে বাগল নদী) চর পড়ে, স্টীমার চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এবং ক্ষুদ্র এই মফস্বল শহরটি অন্যান্য বহির্বিশ্ব হতে আলাদা হয়ে যায়। এতে করে জনজীবনের উপর চাপ পড়ে। কেননা তাদের জীবন ধারা নদীর স্রোতের সাথে চলমান।
কুমারডাঙার সমাষ্টি জীবন বিন্যাসে তবারক ভুইঞা প্রেক্ষন বিন্দু হয়ে ব্যবহৃত হয়। আর মুস্তফার কাহিনীতে হলো মুস্তফার চাচাত ভাই। কুমারডাঙার কাহিনীর দৃষ্টিকোন মূলত লেখকের নিজের। তবারক ভুইঞাকে তিনি ব্যবহার করেছেন।
কাঁদো নদীর কাহিনী গড়ে উঠেছে বাঁকাল নদী ও কুমুরডাঙাকে কেন্দ্র করে। বাঁকাল নদীতে চড়া পরার জন্য স্টীমার আসবে না। তাতে শহর বহির্বিশ্ব থেকে আলাদা হয়ে যাবে।এতে করে জনজীবন হয়ত কিছুটা শীতল হয়ে যেতে পারে। চড়ার কথাটা প্রথমে শহরের প্রভাব শালী ব্যক্তি উকিল কফিলউদ্দীনও বিশ্বাস করতে পারেনি। তার কন্ঠে সন্দেহের সুর। তার প্রশ্ন -কোথায় চড়া পড়েছে, কেই বা বলছে চড়া পরছে। সত্যিকথা বলতে অমঙ্গল টা হুট করে কারো বিশ্বাস হতে চায় না। দেখার পর জানার পরও মনে একটা আকুতি থাকে সব বোধহয় ভুল। আবার সব ঠিক হবে।
আরো একটা কহিনী ছিলো মোক্তার মোসলেম উদ্দিনের মেয়ে সখিনা হঠাৎ বিচিত্র আওয়াজ পায় নদী গর্ভ থেকে। অশান্তি বা বিপদ আসার আগে ইন্দ্রিয় গুলো কিছুটা সাড়া দেয়। কিছু টা আঁচ পাওয়া যায় হয়ত।
লেখক কুমারডাঙা ও তার লোকদের সম্পর্কে বলেন, " কুমুরডাঙার লোক গুলো হিংসুটে এবং নীচমনা যে নিজের নাক কেটেও পরের ক্ষতি করবার জন্য প্রস্তুত। অবশ্য কুমুরডাঙার অবস্থা তেমন ভালো নয়। রাহজানি, খুনখারাবী, নারী ধর্ষন এর মতো দারিদ্র্যও নৈতিক অবনতির একটি লক্ষন।"
লেখক কুমারডাঙা ও তার লোকদের সম্পর্কে বলেন, " কুমুরডাঙার লোক গুলো হিংসুটে এবং নীচমনা যে নিজের নাক কেটেও পরের ক্ষতি করবার জন্য প্রস্তুত। অবশ্য কুমুরডাঙার অবস্থা তেমন ভালো নয়। রাহজানি, খুনখারাবী, নারী ধর্ষন এর মতো দারিদ্র্যও নৈতিক অবনতির একটি লক্ষন।"
মানুষ জন ভাবে বিপদ আসছে। গুটি গুটি পায়ে এসে হাজির হয়েছে দোরগোড়ায়। মূলত মুস্তফা কাহিনী টা উপন্যাসে থাকলেও মূল টা ছিল কি বাঁকাল নদীর চর পড়া প্রসঙ্গে। এবং এতে বর্নিত কুমুড়ডাঙার লোকজনের কর্মকান্ড। তাদের বিস্তর অবস্থার বর্ননা। এমন একটা সময় এর বর্ননা যখন লোক গুলো আতঙ্কিত। এমন কোন মহামারি আসছে যা সমগ্র শহর উজার করে দিচ্ছে। বা কোন মহাপ্লাবন যা দুরন্তবেগে ছুটে আসে মানুষের ঘরবাড়ি ভাসিয়ে নিবে অথবা এমন কোন ভূমিকম্প যা মানুষের পায়ের নিচের শক্ত মাটিকে বিশালকায় কোন জন্তুর মুখগহ্বরের পরিনত করবে।
উপন্যাস টি একক অস্তিত্ববোধের ব্যর্থ মুস্তফার আলেখ্য নয়। আলেখ্য হয়েছে খতিব মিঞার মৃত্তিকাসংলগ্ন মানবিক অস্থিত্বের পান্ডুলিপি।কাঁদো নদী কাঁদো উপন্যাসে লেখক মুক্তি খুজেছেন কিন্ত তা একক কোন মানুষ নয়, তার ছিল মাটি সম্পর্কিত বৃহৎ মানুষের পূর্নজাগরন।
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ বাংলা সাহিত্যের অসামান্য কথাশিল্পী। চেতনায় এমনকি সার্বিক দিক থেকে তার উপন্যাস জীবনবাদী। কাঁদো নদী কাদোঁ উপন্যাসটি ১৯৬৮ সালে প্রকাশিত।
খুব সুন্দর লিখেছেন তবে কিছু বানান ভুল আছে। সেদিকে নজর দিবেন। ধন্যবাদ।
উত্তরমুছুনvlo likcen
উত্তরমুছুন