লেখক-আর্নেস্ট হেমিংওয়ে
অনুবাদ-আহমাদ মাযহার
ধরন-উপন্যাস
পৃষ্ঠা-১১২
মূল্য-৮০
ষ্টুডেন্ট ওয়েজ প্রকাশনা
...
দি ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সী হেমিংওয়ের শ্রেষ্ঠতম উপন্যাস। এই বইটার মধ্যে লিপিবদ্ধ হয়েছে, মানুষের চাহিদা ও নিয়তির মধ্যকার দন্ধ। খুবই ছোট আকারের উপন্যাস, ও কাহিনীও একটু খানি। কিউবার এক জেলেকে নিয়ে লেখা হয়েছে উপন্যাসটি।
গালফ স্ট্রীমের স্রোতে ছোট্ট জেলে নৌকা ভাসিয়ে একাকী মাছ ধরে বেড়ায় বুড়ো সান্তিয়াগো। ৮৪ দিন ধরে ঘুরছে সে সমু্দ্রের বুকে, কিন্তু কোন মাছ পায় নি । তার সাথে যে ছোট ছেলেটা কাজ করতো। তার বাবা মা মনে করে বুড়ো টা অপয়া। তাই তাদের ছেলে কে অন্য নৌকায় পাঠিয়ে দেয়। এবং ছেলেটা ওখানে যাওয়ার ১ম সপ্তাহে বড় বড় তিনটি মাছ ধরে ফেলল। কিন্তু প্রতিদিন বুড়ো লোকটিকে খালি নৌকা নিয়ে ফিরতে হতো।
বুড়ো লোকটির রোগা-পাতলা শরীর। গলা ও ঘাড়ের নিচে কতগুলো গভীর বলি রেখা। সূর্যের তীব্র প্রতিফলন তার চুপসে যাওয়া গালের চামড়ায় বাদামি ফুসকুরি তুলেছে। মুখের দুপাশে নিচের দিকে নেমে গেছে সেগুলো। দুটি হাত গভীর ক্ষত চিহ্নে ভরা। শুধু চোখ দুটো সমুদ্রের মতো নীল, উচ্ছ্বাস ময় আর অপরাজিত।
যেখানে জেলেরা নৌকা বেধে রাখে, সেখান দিয়ে আসার সময় ছেলেটা ডেকে উঠল, "সান্তিয়াগো আমি তোমার সাথে যাব।" ছেলেটি বুড়ো লোকটাকে পছন্দ করে কিন্তু তার মা বাবার জন্য পেরে উঠে না। সান্তিয়াগো বলে উঠে, "তুমি ভাগ্যবানের নৌকায় আছ, ওখানেই থাকো।"
ছেলেটা তাকে আগের দিনের কথা স্মরন করায়। যে তারা ৮৭ দিন পরেও মাছ ধরেছিল। সে বুড়োকে বিয়ার খাওয়ার অফার করে। তাকে সার্ডিন দিতে চায়। এমনকি কিছু টোপও। সে তার সাথে যেতে চাইলে সান্তিয়াগো তাকে নিষেধ করে। তাই সে অন্য উপায়ে বুড়ো কে সাহায্য করতে চায়।
বুড়ো তাকে জানায়, পর দিন সে আরো দূরে যাবে নৌকা নিয়ে।
"দি ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সী" হেমিংওয়ের অসাধারন এক সৃষ্টি। যেখানে পুরো উপন্যাস টাই রূপক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে এক বুড়োর জীবন সংগ্রাম তুলে ধরা হয়েছে। নিজের লক্ষ্যের দিকে একাই এগিয়ে যাওয়ার যে দৃঢ় মনোভাব তা বুড়ো সান্তিয়াগোর চরিত্রে পাওয়া যায়। সে বুড়ো তার অভিজ্ঞতাও অনেক, কিন্তু তার ভাগ্য বিরূপ। তাই বলে সে ভেঙ্গে পড়েনি। এখনও সব কিছু তার আয়ত্তে আছে, যদিও সে বৃদ্ধ।এবং ব্যবসার সমস্ত কলা কৌশল তার জানা আছে।লক্ষ্যে সে অবিচল, যদিও সাফল্য সুদূর পরাহত। কিন্তু নিজের চেষ্টায় সে সুখী।
"হেরে যাবার জন্য জন্ম হয় নি মানুষের, বলল বুড়ো লোকটি। মানুষ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে কিন্তু পরাজিত হতে পারে না কখনো "
শেষ পর্যন্ত সান্তিয়াগোর ভাগ্য কতটা পরিবর্তীত হয়েছিলো তার জন্য পুরো বইটাই পাঠক কে শেষ করতে হবে। এই উপন্যাসে বুড়ো সান্তিয়াগোর আবির্ভাব ঘটেছে এক মহান জীবন উপলব্দি নিয়ে। আর তা হলো, মানুষ বুড়ো হয়ে গেলে ভাগ্যহীনতা তাকে নত করে দিতে পারে। কিন্তু তবুও সে সাহস হারায় না। নিয়ম কানুন মেনে চলায় সে থাকে বদ্ধ পরিকর।
প্রতিকূলতা নিত্যসঙ্গী, কিন্তু এই প্রতিকূলতা তার অর্জন কে ধ্বংস করে ফেললেও, সে জয় লাভ করবেই।প্রকৃতির সাথে যুদ্ধের একটা চিত্র আছে উপন্যাসে। আর সংগ্রাম টাই মুখ্য, তার মধ্যেই খুজে পাওয়া যায় জীবনের মহত্ব।আর এই দার্শনিক উপলব্ধি হেমিংওয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন তার "দি ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সী" উপন্যাসে।
আর্নেস্ট হেমিংওয়ে ১৯৫৪ সালে "দি ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সী" উপন্যাসের জন্য নোবেল পুরস্কার পান।আর তখন থেকেই তিনি বিশ্ববিখ্যাত হন। তাঁর পুরো নাম "আর্নেস্ট মিলার হেমিংওয়ে"। হেমিংওয়ের সৃষ্টি গুলোতে, যুদ্ধ, অ্যাডভেঞ্চার, ক্রীড়া ও স্নায়বিক উত্তেজনা এবং মৃত্যুময়তায় পূর্ণ। আর কিছু না হলেও নিপুণ গল্পকার এবং দক্ষ ভাষাশিল্পী হিসেবে হেমিংওয়ে বিশ্বের সাহিত্য ইতিহাসে অক্ষয়কীর্তি হয়ে থাকবেন। তিনি মার্কিন কথাসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত।
অনুবাদ-আহমাদ মাযহার
ধরন-উপন্যাস
পৃষ্ঠা-১১২
মূল্য-৮০
ষ্টুডেন্ট ওয়েজ প্রকাশনা
...
দি ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সী হেমিংওয়ের শ্রেষ্ঠতম উপন্যাস। এই বইটার মধ্যে লিপিবদ্ধ হয়েছে, মানুষের চাহিদা ও নিয়তির মধ্যকার দন্ধ। খুবই ছোট আকারের উপন্যাস, ও কাহিনীও একটু খানি। কিউবার এক জেলেকে নিয়ে লেখা হয়েছে উপন্যাসটি।
গালফ স্ট্রীমের স্রোতে ছোট্ট জেলে নৌকা ভাসিয়ে একাকী মাছ ধরে বেড়ায় বুড়ো সান্তিয়াগো। ৮৪ দিন ধরে ঘুরছে সে সমু্দ্রের বুকে, কিন্তু কোন মাছ পায় নি । তার সাথে যে ছোট ছেলেটা কাজ করতো। তার বাবা মা মনে করে বুড়ো টা অপয়া। তাই তাদের ছেলে কে অন্য নৌকায় পাঠিয়ে দেয়। এবং ছেলেটা ওখানে যাওয়ার ১ম সপ্তাহে বড় বড় তিনটি মাছ ধরে ফেলল। কিন্তু প্রতিদিন বুড়ো লোকটিকে খালি নৌকা নিয়ে ফিরতে হতো।
বুড়ো লোকটির রোগা-পাতলা শরীর। গলা ও ঘাড়ের নিচে কতগুলো গভীর বলি রেখা। সূর্যের তীব্র প্রতিফলন তার চুপসে যাওয়া গালের চামড়ায় বাদামি ফুসকুরি তুলেছে। মুখের দুপাশে নিচের দিকে নেমে গেছে সেগুলো। দুটি হাত গভীর ক্ষত চিহ্নে ভরা। শুধু চোখ দুটো সমুদ্রের মতো নীল, উচ্ছ্বাস ময় আর অপরাজিত।
যেখানে জেলেরা নৌকা বেধে রাখে, সেখান দিয়ে আসার সময় ছেলেটা ডেকে উঠল, "সান্তিয়াগো আমি তোমার সাথে যাব।" ছেলেটি বুড়ো লোকটাকে পছন্দ করে কিন্তু তার মা বাবার জন্য পেরে উঠে না। সান্তিয়াগো বলে উঠে, "তুমি ভাগ্যবানের নৌকায় আছ, ওখানেই থাকো।"
ছেলেটা তাকে আগের দিনের কথা স্মরন করায়। যে তারা ৮৭ দিন পরেও মাছ ধরেছিল। সে বুড়োকে বিয়ার খাওয়ার অফার করে। তাকে সার্ডিন দিতে চায়। এমনকি কিছু টোপও। সে তার সাথে যেতে চাইলে সান্তিয়াগো তাকে নিষেধ করে। তাই সে অন্য উপায়ে বুড়ো কে সাহায্য করতে চায়।
বুড়ো তাকে জানায়, পর দিন সে আরো দূরে যাবে নৌকা নিয়ে।
"দি ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সী" হেমিংওয়ের অসাধারন এক সৃষ্টি। যেখানে পুরো উপন্যাস টাই রূপক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে এক বুড়োর জীবন সংগ্রাম তুলে ধরা হয়েছে। নিজের লক্ষ্যের দিকে একাই এগিয়ে যাওয়ার যে দৃঢ় মনোভাব তা বুড়ো সান্তিয়াগোর চরিত্রে পাওয়া যায়। সে বুড়ো তার অভিজ্ঞতাও অনেক, কিন্তু তার ভাগ্য বিরূপ। তাই বলে সে ভেঙ্গে পড়েনি। এখনও সব কিছু তার আয়ত্তে আছে, যদিও সে বৃদ্ধ।এবং ব্যবসার সমস্ত কলা কৌশল তার জানা আছে।লক্ষ্যে সে অবিচল, যদিও সাফল্য সুদূর পরাহত। কিন্তু নিজের চেষ্টায় সে সুখী।
"হেরে যাবার জন্য জন্ম হয় নি মানুষের, বলল বুড়ো লোকটি। মানুষ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে কিন্তু পরাজিত হতে পারে না কখনো "
শেষ পর্যন্ত সান্তিয়াগোর ভাগ্য কতটা পরিবর্তীত হয়েছিলো তার জন্য পুরো বইটাই পাঠক কে শেষ করতে হবে। এই উপন্যাসে বুড়ো সান্তিয়াগোর আবির্ভাব ঘটেছে এক মহান জীবন উপলব্দি নিয়ে। আর তা হলো, মানুষ বুড়ো হয়ে গেলে ভাগ্যহীনতা তাকে নত করে দিতে পারে। কিন্তু তবুও সে সাহস হারায় না। নিয়ম কানুন মেনে চলায় সে থাকে বদ্ধ পরিকর।
প্রতিকূলতা নিত্যসঙ্গী, কিন্তু এই প্রতিকূলতা তার অর্জন কে ধ্বংস করে ফেললেও, সে জয় লাভ করবেই।প্রকৃতির সাথে যুদ্ধের একটা চিত্র আছে উপন্যাসে। আর সংগ্রাম টাই মুখ্য, তার মধ্যেই খুজে পাওয়া যায় জীবনের মহত্ব।আর এই দার্শনিক উপলব্ধি হেমিংওয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন তার "দি ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সী" উপন্যাসে।
আর্নেস্ট হেমিংওয়ে ১৯৫৪ সালে "দি ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সী" উপন্যাসের জন্য নোবেল পুরস্কার পান।আর তখন থেকেই তিনি বিশ্ববিখ্যাত হন। তাঁর পুরো নাম "আর্নেস্ট মিলার হেমিংওয়ে"। হেমিংওয়ের সৃষ্টি গুলোতে, যুদ্ধ, অ্যাডভেঞ্চার, ক্রীড়া ও স্নায়বিক উত্তেজনা এবং মৃত্যুময়তায় পূর্ণ। আর কিছু না হলেও নিপুণ গল্পকার এবং দক্ষ ভাষাশিল্পী হিসেবে হেমিংওয়ে বিশ্বের সাহিত্য ইতিহাসে অক্ষয়কীর্তি হয়ে থাকবেন। তিনি মার্কিন কথাসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন