বুধবার, ১ মার্চ, ২০১৭

বই- সমগ্র কিশোর উপন্যাস

লেখক-ইমদাদুল হক মিলন
ধরন-সমগ্র
পৃষ্ঠা-৩৪৪
মূল্য-৪০০
অনন্যা প্রকাশনী।
ইমদাদুল হক মিলনের কিশোর উপন্যাস সমগ্রের প্রথন খন্ড এটি। এই বইয়ে মোট সাতটি উপন্যাস দেওয়া আছে। কোনটা থ্রিলার, কোনটা ভূতের, কোনটা ডাকাতের এরকম মজার কতগুলো গল্প নিয়ে সাজানো আয়োজন।একটির থেকে অন্যটি কোন অংশে কম নয়।
গল্প গুলো হলো-
১. "কে"-এটি একটি অতিপাকৃত গল্পের বিবরন। একটা রহস্য। রহস্যটা গল্পটাকে আগাগোড়া মুড়িয়ে নিয়েছে।
২. "চিতা রহস্য"-খোকন নামের ক্লাস সেভেনে পড়ুয়া এক কিশোরের গোয়েন্দ হওয়ার তীব্র বাসনা। এই ইচ্ছার সাথে চেষ্টার বর্ননা। শেষ পর্যন্ত ফেলুদা ভক্ত ছেলেটা সত্যিই গোয়েন্দা হয়ে গিয়েছিলো।
৩. এক যে ছিলো টুনি-এক মেয়ে টুনি সে শুধু তার ভাইটির কথা ভাবত। সে পালিয়ে গেছে অনেক দিন আগে। ভাবতে ভাবতে ভাই টুনুর জন্য কেদে উঠত সে। তার যে কি স্বভাব। সে শুধু পালাবে। পালিয়ে বেড়িয়ে কিছু দিন পরে ফিরে আসতো টুনু এসে বোনের সাথে পুরো পৃথিবীর গল্প জুড়তো।
আজ অনেক দিন হয়ে গেল টুনু আসে না। কিন্তু এ নিয়ে তার মা বাবাদের কোন প্রকার চিন্তা নেই। তার মা শুধু তার ভাইকে বকে। টুনিদের সংসার ছোট । মা বাবা টুনু টুনি আর ওই কাজের লোক হাবুদা।তার বাবা আর হাবুদা সারা দিন বাজারে আড়তে থাকে। বাড়িতে সে আর তার মা। ইতু টুনির বন্ধু। তারা এক সাথে স্কুলে যায়। আজ টুনির আসতে দেরি হওয়াই ইতু একা একা চলে গেছে। মন খারাপ করে আনমনে হাটতে হাটতে থাকে টুনি। ভাই বোনের একটা সুন্দর সম্পর্কের বর্নানা করেছেন লেখক। টুনির মতো কাহিনীটা সব বোনদের থাকে কিনা জানি না। কিন্তু জামি'র ছিলো। সেও একদিন কেঁদেছিলো এরকম করে তার ভাইয়ার জন্য।
৪. ডাকাতরাও মানুষ- নদী থেকে খালে ঢুকতেই লঞ্চ বন্ধ হয়ে গেল। হায়দার সাহেব ঢাকায় থাকেন। সেখান থেকে আসছিলেন। তার মেয়ে শান্তির বিয়ে। মেয়ের জন্য গয়নাগাটি আর,কাপড় চোপর নিয়ে এসেছেন। সাথে আছে বারেক।
এক মাত্রমেয়ের বিয়ের বিয়ে যদি দশ ভরি গয়নার কারনে না হয়, সে বড় দুখের কথা। তাই তিনি সব ব্যবস্থা করেছেন খেটে খুটে। হঠাৎ মাঝপথে লঞ্চ গেল নষ্ট হয়ে।ভয়ে তার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। এত গুলো জিনিস যদি ডাকত ধরে। ডাকাতি হলে তিনি আর তার মেয়ের বিয়ে দিতে পারবেন না। এসব ভাবতে ভাবতে তার গলা আরো কাট হলো।
শেষ পর্যন্ত ডাকাতের কবলে তাকে পরতে হয়েছিলো কিন্তু তা বেশ অন্যভাবে।
৫. ভূতের নাম রমাকান্ত- ছোট বাচ্চা এক ভূত ঘুমঘুমির মাঠে এসে বাড়ির রাস্তা ভুলে যায়। তার সাথে দেখা হয়, বাদ্যবাড়ির লালটুর সাথে। লালটু আর ভূত রমাকান্তের পরিচয় হয় এই ঘুমঘুমির মাঠে। তার পর থেকেই তাদের তেড়িং ভেড়িং শুরু। 
৬. ফিরে এলো রমাকান্তকামার- প্রথম গল্পে রমাকান্তকামার তার বাড়িতে ফিরতে পারছিলো শেষ পর্য়ন্ত অনেক হাঙ্গামা করে। অনেক দিন লালটুর সাথে তার কোন যোগাযোগ ছিলো না। এই গল্পে সে আবার হুট করে ফিরে এলো তার বন্ধু লালটুর কাছে। তবে এলো তো টিকই, এসে লালটুকে দিলো ভড়কে। আর পালোয়ানকে দিল ধমকে।
৭. ভূতের কবলে ডাকাত সর্দার- বাদ্যকরেরা কতোদিনের জন্য বাড়ি ছেড়ে কাজে গেছে। এই ফাকে কিরমান ডাকাত বাদকের বাড়িতে হামলা চলালো। লালটুর বন্ধু হলো রমাকান্তকামার। বন্ধুর এমন বিপদে রমাকান্তকামার তো আর চুপ থাকতে পারে না। সে কাজে লেগে গেল। কি কান্ড করেছিলো তা থাকলো বইয়ের পাতায়।
বইটা কিশোর উপন্যাস, আর বাচ্চা বাচ্চা মনমানসিকতার মানুষদের জন্য এবং শিশুকিশোর দের জন্য। বড়দের না পড়াই ভালো। তারা ততটা মজা নিয়ে হাসতে পাড়বেন বলে মনে হয় না। তবে আমি মজা পেয়েছি। আর বইয়ের প্রথম গল্পটা বড়দের জন্যই। এই রহস্যটা ছোটদের জন্য কঠিন হয়ে যাবে খুব। টুনিটুনুর গল্পটা হলো ভাইবোনদের জন্য। চিতা রহস্যটা একটা থ্রিলার। ডাকাতরাও মানুষ মানবিক গল্প। আর রমাকান্তর গল্প গুলো - "শোজ যা লবে ষশে রাক বেযা না।"

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন