লেখক-আহসান হাবীব
ধরন-উপন্যাস
পৃষ্ঠা-৮৮
মূল্য-১৫০
অন্যপ্রকাশ প্রকাশনী
ধরন-উপন্যাস
পৃষ্ঠা-৮৮
মূল্য-১৫০
অন্যপ্রকাশ প্রকাশনী
নদী ভাঙনে সব কিছু হারিয়ে, নিস্ব হয় মরিয়ম।এরপর তার ছেলে মেয়ে নিয়ে পাশের গ্রামে উঠে আসে। সেই থেকে তার সংসারে দূর্দিনের শুরু। ঠিক মতো খাবার টাও জুটে না। তিন বেলা পাত পড়ত না ঠিক মতো।
বাচ্চা ছেলে মহিমের আজ মাছ খেতে খুব ইচ্ছা করছে। কিন্তু এই সময় ছেলের জন্য মাছ পাবে কই? ছেলের জন্য খারাপ লাগে মরিয়মের। সে কথা ঘুরাতে চায়। মহিম জানতে চায় কি রান্না হবে আজ। এবং ঘরে তেল আছে কিনা। মরিয়ম বলে তেল দিয়ে সে কি করবে। মহিম জানায় সে মাছ খুজে আনবে। মাছ ভাজা খাবে কতদিন খায় না। মা হেসে তাকে লাকড়ি আনতে বলে।
মহিম বেড়িয়ে যায়। জানে লাকড়ি আনতে না পারলে ভাতও জুটবে না। কিন্তু লাকড়ি ছেড়ে যে পথ দিয়ে হেটে গেল সেটা মিলেছে গিয়ে ওয়াজিউল্লাহদের মাছের ঘেরের কাছে। মহিম ঠিক করেছে সে আজ মাছ চুরি করবে। কিন্তু যদি ধরা পড়ে তাহলে কি হবে?
তাকে কি চোরের মতো মারবে। মহিম এর ছোট বুকটায় অজানা আশংকায় ছেয়ে যায়।
তাকে কি চোরের মতো মারবে। মহিম এর ছোট বুকটায় অজানা আশংকায় ছেয়ে যায়।
হাসপাতালে শোয়া ওয়াজিউল্লাহ। তার কপাল কুচকানো। এক্স মিনিস্টার এবং বগুড়া জেলার বর্তমান এমপি তিনি। হঠাৎ করে তিনি বাকরূদ্ধ হয়ে গেছেন। অন্য কোন সমস্যা নেই। তবে কোন কারনে তিনি কথা বলতে পারছেন না। অবশ্য ইশারায় বুঝাতে পারছেন। এই এমপি যথেষ্ট ক্ষমতাবান। ডাক্তার ও নার্সের মধ্যে তাড়াহুড়া লেগে যায় তাকে দেখে। ডাক্তাররা টেস্ট করে বুঝতে পারছেন তেমন কিছু না। সামান্য স্ট্রোক থেকে প্যারালাইজড। কয়েকদিনে ঠিক হয়ে যাবে।
ক্লিনিকের সবচেয়ে সিনিয়র প্রফেসর ডাঃ জাকির হোসেন এসেছেন। সাথে নিয়ে এসেছেন তরুণ সুদর্শন ডাক্তার। এমপি এর পাশে স্ত্রী কন্যাও আছেন। প্রফেসার কেবিনে ঢুকে বললেন, "মোটেও ঘাবড়াবেন না।" প্রফেসর হাত দিয়ে তরুন ডাক্তার কে দেখালেন। এই ডাক্তার তার দ্বায়িত্বে থাকবে জেনে এমপি বেশ শান্তি অনুভব করলেন। কি সুন্দর দেখতে! ছেলেরা সাধারনত এত সুন্দর হয় না। হাসি আরো বেশি মোহনীয়। এমপি কন্যা বেশ একটা আকর্ষন নিয়ে তরুন ডাক্তার কে দেখছে।
এমপি সাহেবের খুব একটা উন্নতি হচ্ছে না। তবে তার খারাপ ও লাগছে না।হাসপাতালে বসে থেকে তিনি ভাবছেন, মানুষ বলে পৃথিবীতে পাপ করলে নাকি পৃথিবীতেই শাস্তি পেতে হয়। কিন্তু তার এমন কিছু হয় নি। তার যে এত এত পাপের সমাহার। কিন্তু কেউ কোন দিন ধরতে পারেনি। তার যতো সম্রাজ্য সব দুই নাম্বারি করে করা। তবুও কি কেউ টের পেয়েছে কখনো। পায়নি, তার বদল দিন দিন তার সব আরো বেশি উন্নতি হচ্ছে। এইযে এখন হসপিটালে আছেন তাতেও তো খুব বেশি কষ্ট হচ্ছে না। ডাক্তাররা বলেছে দিন সাতেকে ঠিক হয়ে যাবে সব কিছু। তাছাড়া তার দায়িত্বে যে ডাক্তার তার দিকে শুধু তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করে। পুরুষ মানুষ এতো সুন্দর হয়!
এমপি সাহেবের জীবনের ছায়া নিয়ে এর প্লট। আছে ডাঃ গিয়াস এর গল্প। মিলির মতো এক সহজ মেয়ের গল্প। রোজির মুগ্ধতার গল্প। আরো আছে গ্রাম্য ছেলে আজমল এর ভালবাসার গল্প। আছে উকিল পত্নী সেলিনার গল্প।
সর্বোপরি বইটা আমার সবদিক থেকে ভালো লেগেছে।শেষ টা ছিলো একেবারে মন মতো। কিন্তু এর পর তার হাড়িয়ে যাওয়া টা কেমন শুন্য করে দিয়েছে। আজমল তাছাড়া সেলিনাও কম রেখাপাত করেনি গল্পটাতে। জীবনসংশয় এক গল্পের গুচ্ছ এটা। তবে সব গুলোর কেন্দ্রবিন্দু একজায়গায়। এক অসহায় ছেলের জন্মকাহিনী। তার হারানো মায়ের গল্প।এক ফকির এর গল্প। বাস্তবতা হলো এমন , "মৃত্যু মানুষ কে ডাকে সমুদ্রের মতো। যে রকম প্রবল টান ভাটার। তেমনি মৃত্যুও বুঝি এভাবেই টেনে নেয়।"
আহসান হাবীব এর একটি উপন্যাস এই সমুদ্রের ডাক। এখানে লেখক মৃত্যুর প্রতিচ্ছবি দেখিয়েছেন। তিনি একজন সফল রম্যলেখক। তার রচিত কতো গুলো উপন্যাস ও আছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন