লেখক-আহসান হাবীব
ধরন-ব্যঙ্গ ও রম্যরচনা
পৃষ্ঠা-৭০
মূল্য-১০০
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র প্রকাশনী
ধরন-ব্যঙ্গ ও রম্যরচনা
পৃষ্ঠা-৭০
মূল্য-১০০
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র প্রকাশনী
বগুড়া ফয়জুন্নেসা কলেজের ছাত্রী মিলি। সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে। তার ইচ্ছা বিশ্ববিদ্যালয়ে সে দর্শন নিয়ে পড়বে। রাশান কবি ও দার্শনিক মায়কোভস্কির দর্শনের বইয়ে সে একটা অদ্ভূত বিষয় পড়েছিল। সেই থেকে দর্শন তার প্রিয় সাবজেক্ট। রঙিন সব স্বপ্ন উড়া উড়ি করে তার স্বপ্নিল আকাশে।
কিন্তু হঠাৎ একদিন সব ভন্ডুল করে দিল তার বাবা। এক বিকালে রাগিব নামে এক ইঞ্জিনিয়ার কে নিয়ে এলো। তাঁর বড় লোক বন্ধুর ছেলে। বয়সে মিলির থেকে বেশ বড়। গম্ভীর টাইপের। মিলিকে দেখই তার ভালো লাগলো। এবং প্রস্তাবও দিয়ে বসল। মিলির বাবা এটাই চাইছিল।বিয়ে হয়ে গেল মিলির। ধুলিসাৎ হয়ে গেল তার স্বপ্ন।
পড়াশুনার সব পাট চুকিয়ে বন্ধু বান্ধব পরিচিত সব পরিবেশ ফেলে এসে ঢুকলো ধানমন্ডির এক ফ্ল্যাটে। নিজের সংসার।বিয়ের পর পড়াশোনা টা আর হয়নি। রাগিব চায় নি সে ভাবে। মিলি চেষ্টা করলো সংসার নিয়ে সুখী হতে। যারা হাউজ ওয়াইফ হয়ে জীবন কাটাতে চায় তাদের মতো। কিন্তু তার পরও সবকিছুর পর, বহির্মুখী একটা প্রত্যাশা ছিলো বোধহয় কোথাও।
তবুও সময় গড়ালো মিলির একটা ফুটফুটে মেয়ে হলো মুনা। মুনা বড় হলো, মিলির ডিউটি কিছু বাড়লো। মুনা স্কুলে ভর্তি হলো। আর একটু কাজ বাড়লো। মুনার সাথে স্কুলে যাওয়া আসা টা ছিলো মিনার অন্যরকম ভালো লাগা। স্কুলের বারান্দায় গার্জেনদের মধ্যে শাড়ি গয়নার আলাপ, এই তো সহজ জীবন। তাতে কোথাও মিলি সেই কিশোরী বয়সের ভালোলাগা মায়কোভস্কিকে কখনো পায় নি।
একগেয়ে সময় থেকে কিছুটা বিরতি পাওয়ার জন্য মিলি রাগিব কে বলল, মুনার স্কুল ছুটি দিলে একটু বাড়ি থেকে ঘুরে আসতে চায়। রাগিব বয়সে বড় হওয়ায় মিলি তার সাথে তেমন একটা ফ্রি হতে পারেনি। কথা বলে কর্তৃত্ব নিয়ে। মিলির বুক টিপটিপ করে কথা বলার সময়।
অনেক করে বলার পরও রাগিব চিৎকার করে উঠল, "ঘরের বউ বউের মতো থাকো। না হলে কেওক্রাডং চলে যাও। পর্বতের চূড়ায় ধেই ধেই করে নাচ গিয়ে!" কথা গুলো শুনে স্তম্বিত হয় সে। তবে সারা দিন রাত, এই শব্দগুলোই মিলির মাথা থেকে গেল না। রাতে ঠিক মতো ঘুমাতেও পারে নি।
এই কেওক্রাডং নিয়েই কাহিনী।
তবে এর মধ্যে চলে আসে আরো কিছু গল্প। কিছু পুলিশি ব্যাপারও জড়িয়ে গেছে। আছে রঞ্জুর মতো আলোকচিত্রির ভূমিকা।
তবে এর মধ্যে চলে আসে আরো কিছু গল্প। কিছু পুলিশি ব্যাপারও জড়িয়ে গেছে। আছে রঞ্জুর মতো আলোকচিত্রির ভূমিকা।
একটা মেয়ের কিশোরী বয়সের স্বপ্নটাকে দুম করে মেরে দিলো তার বাবা। স্বামী যদি বন্ধু হতো তাহলে হয়তো এতটা নাগপাশ লাগতো না। তবে হয়নি। বন্ধু না হয়ে হয়েছে কর্তা। ব্যাপারটা এমন, আমার আন্ডারে তোমার চলতে হবে। একটা স্বাধীনচেতা মেয়ের স্বাধীনতাকে পুরো খর্ব করে দিলো। বানিয়ে দিলো ব্যাকডেঢেট।
তবে সত্তা কে তো একেবারে ঘুম পাড়িয়ে দিতে পারেনি। সুপ্ত থেকে একসময় ঠিকি জেগে উঠেছে।মন থেকে প্রতিবাদ করেছে সব কিছুর। বাবা এমন কি স্বামী সংসারের সাথেও। ইচ্ছা এবং প্রত্যাশাই তাকে নিয়ে গেল অনেক দূর। রাগিব টাইপ মানুষ গুলোর জন্য অনেক মেয়ের সুখী মানুষের মতো অভিনয় করে জীবন কাটাতে হয়।
আহসান হাবীব এর অন্যতম উপন্যাস এই কেওক্রাডং। আহসান হাবীব হলেন অন্যতম রম্য লেখক। এবং তিনি একজন কার্টুনিস্ট।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন