বুধবার, ১ মার্চ, ২০১৭

বই- নিকি

লেখক-মোশতাক আহমেদ
ধরন-সায়েন্সফিকশন
পৃষ্ঠা-১১২
মূল্য-১২০
বর্নায়ন প্রকাশনী।
রাহাত সাহেবের মাথায় একটা বড় টিউমার ধরা পড়েছে। অনেক চেষ্টা তদবির করেও কাজ হয় নি। ডাক্তার বলেছে তার আয়ু আর ১মাস। রাহাত সাহেবের একমাত্র ছেলে রনি, তার বয়স বার। ক্লাস সিক্সের ছাত্র। জন্মের সময় মা কে হারিয়েছেন। রাহাত সাহেবের চিন্তা শুধু এই রনি কে নিয়ে। মারা যাবেন একথা ভাবতে তার কষ্ট হয় না। কিন্তু তার ছেলের কি হবে তা ভাবলেই মাথা ধরে। তিনি চাকরি ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। কারন তিনি বাকি সব কয়টা দিন তার ছেলের সাথে কাটাতে চান। কিন্তু অফিস তাকে তিন মাসের ছুটি দিলো। তিনি এসময় টা তার গ্রামের বাড়িতে কাটাবেন বলে ভাবছেন। রনিকে একথা বলার পর সে খুব খুশি হয়। সে তার বাবাকে একটা ফুটবল কিনে দিতে বলে, কেন না বাড়ি গিয়ে বন্ধুদের সাথে খেলবে। যথাসময় তারা বাড়ি পৌছে যায়। গ্রামে এসে রনি তার বন্ধুদের সাথে মেতে উঠে। দল বেধে ফুটবল খেলে। রনির বাবা, রনি ও তার বন্ধুদের টর্চ কিনে দিয়েছিলো। রনি সেগুলোও তাদের দেয়। এতে উল্লাস আরো বেড়ে যায়। তারা একে অপরের মুখে আলো ফেলে। হঠাৎ একটা শব্দ হয়। চমকে উঠে সবাই। হাসান চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে। কি হইল, বা কই হইলো!?
মনে হচ্ছে বিলের কাছে হয়েছে। সবাই দৌড়ে বিলের কাছে গেল। সেখানে পৌছে দেখে একটা ধাতব বস্তু তে আগুন লেগে দাউ দাউ করে জ্বলছে।সবাই ভাবছিলো এটা কোন প্লেন কিন্তু দেখতে প্লেন এর মতোও মনে হয় না। রনি ঘুরে দেখে দেখে বুঝতে পারল এটা প্লেন নয় কিন্তু এটা ইউএফও বা আনআইডেন্টিফাইড ফ্লাইং অবজেক্ট। যে কোন কারনেই হোক এটা বিধ্বস্ত হয়েছে। একঘন্টার মধ্যে আগুন নিভে গেল এবং পুলিশ এসে সবাই কে বাড়ি যেতে বলল। ততক্ষনে অন্ধকার হয়ে গেছে।
রাতে আটটার টিভি সংবাদ শুনে রনি অবাক হলো।সংবাদে বলা হল এটা একটা মহাকাশযান। কিন্তু পৃথিবীর কোন দেশের নয় ধারনা করা যাচ্ছে অন্যগ্রহ থেকে এসেছে। এবং হয়তো ত্রুটিজনক কারনে এটা এভাবে বিধ্বস্ত হয়। আরো আশ্চর্যজনক কথা হলো। মহাকাশযানের প্রানীটা জীবিত ছিলো। কারন এর পাশেই পায়ের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এরকম চিহ্ন পৃথিবীর মানুষের নয়। এবং সাবধান করা হলো যদি সত্যি এ প্রানী পৃথিবীতে এসে থাকে, তবে সে উপকারী না অপকারী এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন নিশ্চয়তা দেওয়া যাচ্ছে না। তাই গ্রামের সকল কে রাতে না বের হতে বলা হয়।
এগুলো নিয়ে রনি অনেক ভাবল এমন কি বাবার সাথেও এব্যাপারে কথা বলল। হঠাৎ রাহাত সাহেবের মাথাব্যথা টা বেড়ে গেল। রাহাত তার ডাক্তার চাচা কে ডেকে আনার জন্য বের হলো। রনি যখন তেতুল গাছের নিচ দিয়ে যাচ্ছিলো তখন উ উ শব্দ শুনতে পেল। কিন্তু কিছু দেখতে পেল না। হঠাৎ ভূত প্রেতের কথা মনে হওয়া আর দাড়াল না। রহমত ডাক্তার রাহাত সাহেবকে ইনজেকশন দিতে কিছুক্ষনের মধ্যেই ব্যাথাটা সেরে যায়। রাহাত সাহেব ঘুমিয়ে পড়লে সে রনি কে বলল , তোমরা কালই শহরে চলে যাবে এবং সেখানে হাসপাতালে তোমার বাবাকে ভর্তি করবে তার বাড়িতে থাকা ঠিক হচ্ছে না। ডাক্তার কে এগিয়ে দেওয়ার সময় রনি আবারো এই শব্দ টা শুনতে পেল। সে বুঝতে পারলো বাগানের ভেতর থেকে আসছে। সে ভয়ে কৌতুহল দমন করে ঘরে ফিরতে চাইলো। কিন্তু তখনি একটা আলো জ্বললো। আলো একটু হলেও তার তীব্রতা ছিলো বেশ। সে ভিতরে প্রবেশ করলো। কিন্তু কিছু পেল না। সে যখন ফিরে আসবে ভাবলো, তখন আবারো শব্দটা শুনলো তাতে তার চোখ বড় হয়ে গেলো অদ্ভূত একটা প্রাণী কে দেখলো। দেখতে মানুষের মতো কিন্তু আকারে ছোট। গলা থেকে পা পর্যন্ত লম্বা জামা পড়ায় আর কিছু দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু তার মুখে রক্তের ছোপ, আর বাম হাতটা শুন্যে ঝুলছে।
রনি জানতে চাইলো তুমি কে?
প্রানী টা মানুষের মতো টেনে টেনে বলল, নি-কি।
নিকি গল্পটা মোশতাক আহমেদ এর একটি সায়েন্সফিকশন। নিকি হলো হিমচুন গ্রহের প্রানী। দূর্ঘটনা বসত সে পৃথিবীতে চলে আসে। গিগোরা তাকে হত্যা করতে চাচ্ছে। সে রনির কাছে সাহায্য চাইলো। রনি কি তাকে সাহায্য করতে পারবে? গিগোরা কারা? এখানে আছে প্রফেসর হায়দার এর মতো ব্যাক্তি। আছে রনির অনেক গুলো বন্ধু। আর গিগোরা তো আছেই। আর রনির বাবা রাহাত সাহেব তিনি। তিনি কি রনি কে ছেড়ে চলে গেছেন !
সায়েন্সফিকশন, সে বড়ই পছন্দের আমার। বিজ্ঞানের কারিগরি তো ভালই লাগে। আর সেখানে যদি কোন ভিনগ্রহের প্রানী আসে তবে তো সোনায় সোহাগা ! বই টা ভালো লেগেছে। বেশ ভালো লেগেছে। মোশতাক আহমেদ এর সাইফাই গুলো ভালোই লাগে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন