বুধবার, ১ মার্চ, ২০১৭

বই-কে

লেখক-ইমদাদুল হক মিলন
ধরন-কিশোর উপন্যাস
পৃষ্ঠা-৮০
মূল্য-১০০
অনন্য প্রকাশনী।
রবিন তার মেজফুফুর বাড়ি বেড়াতে এসেছে। সবাই তাকে রবি বলে ডাকে। এখানে তাদের মস্তবড় খামার বাড়ি। এই বাড়ি দেখাশোনার জন্য পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে চৌদ্দজন কাজের লোক রাখা হয়েছে। এই বাড়ির ম্যানেজার হায়দার আলী । সে তার পুরো পরিবার নিয়ে থাকে এখানে। তার দুই ছেলে দুই মেয়ে। বড় মেয়ে টার নাম কুসুম। তাকে কেউ কখনো দেখেনি। সে ঘর থেকেই বের হয় না। ওই কুসুম ছাড়া অন্য ছেলে মেয়ে গুলো খুব দুষ্ট। এখানে আরো একটা ছেলে থাকে তার নাম হলো বারেক। সে কিছুটা তোতলা। বয়স রবি মতোই কিন্তু ছোট ক্লাসে পড়ে।বারেক দেখতে মোটামুটি ভাল। তেমন লম্বা না। কিন্তু তার সবছেয়ে সুন্দর হলো চুল। মাথা ভর্তি কালো কুচকুচে চুল।
রবির ফুফা করেছিলেন এই খামার বাড়ি। তার অনেক পরিকল্পনা ছিলো এটা নিয়ে। কিন্তু সব কিছু গোছগাছ করার আগেই তিনি চলে গেছেন ওপারে। ফুফুর দুই ছেলে মেয়ে। দুজন থাকে আমেরিকায়। এবাড়িতে আসার পর রনি কে সব ঘুরিয়ে দেখিয়েছে বারেক।আরো একজনের সাথে তার পরিচয় হয় তিনি হলেন পাগলা মাস্টার।
আসলে তার নাম হলো মতিউর রহমান। স্কুলে তিনি ইংরেজী পড়াতেন। রবি দেখলো লোকটার চোখের পানি দিয়ে গাল দাঁড়ি সব ভিজে যাচ্ছে। তার কথা বলার ভঙ্গি খুব সুন্দর। রবি তার সামনে গিয়ে দাড়াতেই, তার ছাত্র ছিলো কিনা জানতে চাইল। কিন্তু যখন তিনি জানলেন এটা রবির ফুফুর খামার বাড়ি। এখানে সে বেড়াতে এসছে। তখন তিনি ভয় পেলেন। তার মনে হলো রবি বোধহয় তাকে তাড়িয়ে দিতে এসেছে। রবি তার ভুল ভাঙালে তিনি খুশি হলেন। রবি কথা বলে বুঝতে পারল লোকটা খুব অমায়িক। কি সুন্দর করে কথা বলেন তিনি !
এমন একটা লোক কে মানুষ কি করে পাগল বলে তা রবির মাথায় এলো না। সে তাকে মতি মাস্টার বা পাগলা মাস্টার বলে সম্মোদন না করে স্যার সম্মোদন করল। মুগ্ধ চোখে সে তাকিয়ে থাকলো স্যার এর দিকে। খুব বিনীত গলায় জানতে চাইলো স্যার কেন এখানে বসে কাঁদছেন। স্যার এর সাথে কথা বলল রবি পুরো অবাক হলো। সে স্যার কে নাশতা খাওয়ালো। স্যার খুব খুশি হলেন রবি'র এমন ব্যবহারে।
রবি মোটেও প্রস্তুত ছিলো না এরকম কিছু শোনার জন্য। তার কাছে বিষয় টা হয়ে উঠল আরো রহস্যময়। যখন জানলো হায়দার আলীর বড় মেয়ে কুসুম, যে কখনো কারো সামনে আসে না। সেও জড়িত। এভাবে চলতে থাকল গল্প।কেন এতো ভালো একটা মানুষ পাগল হয়ে গেল তার এক করুন কাহিনী ! সাত বছর আগের পুরোনো কথা গুলো শুনে রবি অবাক হয়ে যায়। কি আছে কুসুমের মাঝে? যার বলে সে তার মায়ের হাত ব্যথা পর্যন্ত ভালো করে দিল !
ইমদাদুল হক মিলনের একটি কিশোর উপন্যাস হল "কে"। রবিন এর সাথে ছুটোছুটি করে আমিও রহস্যের কিনারা করেছি । যে রহস্যের মূলে আছে একটি মেয়ে। এক লোকের কান্না বিজাড়িত কাহিনী। বড় হয়ে গেছি অনেক। বড় বড় বই পড়ে ফেলি । কিন্তু এখনো কিশোর উপন্যাসের সহজবোধ্য মাদকতা হারায় না মগজ থেকে। যেভাবেই হোক না কেন, গল্পের হ্যাপী ইন্ডিংটা রবি ও আমি এই দুজনকেই স্বস্তি দিয়েছে ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন